Header Ads

ভালবাসায় সন্দেহ

যত বেশী ভালবাসি তত বেশী সন্দেহ করি


সেদিন আমার সন্দেহ আরো গভীর হলো যেদিন
সিয়াম
দুটা শাড়ি কিনে এনেছিল।আমি ওর আলমারি
খুলতেই
দেখি একটা প্যাকেট। তাতে দুটা শাড়ি।
ভেবেছি হয়তো
আমায় দিবে তাই লুকিয়ে রেখেছে।আমি তাই
আবার
প্যাকেট টা আলমারিতে রেখে দিলাম।একটু
খুশিও হয়েছিলাম।সিয়াম আমায় এরকম উপহার নতুন
দেয়না।
বিয়ের পর থেকে যতবার আমার জন্মদিন এসেছে,ও
আমায়
আমার পছন্দের রঙের শাড়ি দিয়েছে।
কিন্তু সিয়াম রুম এ
এসে আমার সামনেই প্যাকেট টা নিয়ে বের
হয়ে গেল
বাইরে।আমি পিছন থেকে এত ডাক দিচ্ছি
ফিরেও
তাকায়নি।
কাছের মানুষ এর কাছ থেকে লুকোচুরি নেয়া
যায়না।
আমি তখন ই ভেবে নিয়েছি সিয়াম হয়তো মুক্তি
চায়,তা
বলতে পারেনা।কতদিন হয়ে গেল আমার চোখের
দিকে ও
তাকায়না তার হিসাব নেই।
রাত ১২টা, সিয়াম এখনো আসছেনা।কল
দিতেছি,সুইচ অফ
পাচ্ছি।
রাত যখন ১:৪৫তখন ও আসলো বাসায়।হাতের দিকে
তাকিয়ে দেখি প্যাকেট টাও নেই।
না আজ সিয়াম এর কাছে জানবোই যে ও কি
চায়? এই
ভেবে সিয়াম কে বললাম, সিয়াম আজ কাল আমি
কি খুব
বিরক্তি হয়ে যাচ্ছি?
সিয়াম:- আচ্ছা এখন কি এসব বলার সময়?
আমি:- তাহলে কখন জিজ্ঞেস করবো?আচ্ছা
শাড়িগুলি
কার জন্য?
সিয়াম হঠাৎ ক্ষেপে গেল,
এমন রাগ আমি কখনোই দেখিনাই।
সিয়াম:- কারো দরকারি জিনিসে হাত দেয়ার
আগে
জিজ্ঞেস করতে হয় সেটা জানোনা?
আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি।
ভাবছি
এতোদিনেও ওর আর আমার মাঝে "কারো" শব্দটা
রয়ে
গেছে!
আমি নিতান্তই খুব অভিমানী কিন্তু ঝগড়া খুব কম
করতে পারি।
আমি আবারো জিজ্ঞেস করলাম শাড়িগুলি
কার?
সিয়াম প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই ওয়াশ রুম এ চলে
গেল।
বাইরে বৃষ্টি নামলো, আমি তাতে ভাঙনের শব্দ
পেয়েছিলাম বার বার।৮বছরের তিল তিল করা
বিশ্বাস
এর ভাঙন, ভালোবাসার ভাঙন, আস্থার ভাঙন।
ওয়াশ রুম
থেকে বের হয়ে সিয়াম শুয়ে পরলো।
আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম কি খাবেনা?
সিয়াম:- না, খেয়ে এসেছি।
আমি:- আমিতো না খেয়ে বসে আছি,আর তুমি
খেয়ে
এসেছো?
সিয়াম:- আমি কি তোমায় খেতে বারন করেছি?
আমি তখন আর কিছু বলতে পারলাম না,হয়তো
আরো কিছু
শুনবো যা আমি হজম করতে পারবো না তাই, আমি
না
খেয়ে শুয়ে পরলাম।
ওপাশ ফিরে শুয়ে থাকলেও পাশের মানুষ টা যে
ঘুমাচ্ছেনা আমি খুব বুঝলাম।এতোদিনে ওকে
আমি খুব
চিনে নিয়েছি।
সিয়াম এর দিকে ফিরে দেখি ও চোখের উপর
হাত দিয়ে
শুয়ে আছে।আমার সেদিন অকারনেই খুব কাঁন্না
পাচ্ছিল,জানিনা সে কাঁন্নার পিছনে কারন
তবে খুব
কাঁন্না পাচ্ছিলো, ইচ্ছে হয়েছিল কোন খোলা
জায়গায়
গিয়ে কাঁদি।
শুয়ে শুয়ে বিয়ের পরের সময়গুলির কথা ভাবি।
আমার মন
খারাপ থাকলেই আমি সিয়াম এর সাথে
কাটানো ৮
বছরের কথা ভাবি,তাতেই আমার মন ভালো হয়ে
যায়।
রাত তখন ৩:৩০এর মতন, এর মধ্যেই সিয়াম এর ফোন এ
কল
আসার শব্দে আমার চোখ খুলে যায়। সিয়াম
তাড়াতাড়ি
কল রিসিভ করলো,এমন মনে হচ্ছিল যে সিয়াম এই
ফোন
এর অপেক্ষায় ছিল।ও আবার বারান্দায় গেল।
আমিও
বারান্দার দরজার পাশে দাড়িয়ে আছি।
ও দেখি খুব খুশি হয়ে বলতেছে," এই একটা আশা
নিয়ে
বেঁচে ছিলাম।ওর জন্য অপেক্ষা করা আজ সফল।
আমি খুব
খুশি আজ,ও শুধুই আমার।"
এ কথা শোনার পর সিয়াম এর প্রতি আমার কেমন
যেন না
চাইতেই ঘৃনা এসে গেলো, কি সহজেই ও আমায়
বাতিলের
খাতায় ফেলে দিল,কি সহজে ও আমার জায়গা
অন্য
কাউকে দিয়ে দিল।সিয়াম ৮বছরে আমার কাছে
মহান
হয়ে গেলেও আজ এক মুহূর্তে একদম খারাপ মানুষে
পরিনত
হল,আমার পক্ষে ওর সাথে থাকা আর সম্ভব ছিলনা।
অপছন্দ নিয়ে কাটানো গেলেও পছন্দের মানুষ এর
কাছে অপছন্দের হবার পর একসাথে থাকা যায়না।
ভালোবাসার মানুষ এর কাছ থেকে সব নেয়া
গেলেও
তাচ্ছিল্য নেয়া যায়না।
এর মধ্যেই সিয়াম এর কথা বলা শেষ হয়ে গেল,ও
এসে
দেখে আমি দরজার পাশে দাড়িয়ে আছি।
সিয়াম:- কি বেপার?তুমি আমায় লুকিয়ে
লুকিয়ে
দেখছো?স্পাইগিরী করো?
আমি :- যা আমার কাছে স্পষ্ট তা আমার লুকিয়ে
দেখার
প্রয়োজন নেই।
সিয়াম:- মানে?
আমি:- এক সাথে দু নৌকায় পা দেয়া বন্ধ করো।
সিয়াম:- তোমার মাথা ঠিক আছে?
আমি:- ও তুমি আমায় এখন পাগল প্রমান করে ঘর
থেকে
বের করে দিবে?আমায় তো বললেই পারতে
আমি চলে
যেতাম।
সিয়াম:- তুমি তো কবে থেকেই যাই যাই করছো?
ঘর করার
আগেই ভাঙার চেষ্টা করাই তোমার কাজ।
আমি:- তুমি লম্পট যা আমার চিনতে এতদিন
লেগে গেছে।
সিয়াম:- উফ!আমায় একটু শান্তি দেও।আমায় একটু
ভালো
থাকতে দেও।
আমি আর কিছু বলতে পারিনি।আমার কাছে সব
স্পষ্ট হয়ে
গেল।
এর মাঝেই আবার কল আসলো, সিয়াম কল রিসিভ
করেই
শুকনো মুখ নিয়ে বললো,আচ্ছা আমি আসছি।
তখন ই আমি ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি ৪.১০বাজে।
এই সময়
কে ওকে ডাকে? আর ও যেতে রাজি হয়ে গেল।
আমি:- আচ্ছা সিয়াম শোন,আমি জানি যার কিছু
দেয়ার
ক্ষমতা নেই তাকে কেউ পছন্দ করে না।আমায় তার
চেয়ে
মুক্তি করে দেও।
সিয়াম:- কিভাবে মুক্তি চাও? তার মানে তুমি
বলতে চাও
আমি তোমায় শিকল পরিয়ে রেখেছি?
এই বলে ও তৈরী হচ্ছে বাইরে যাবার জন্য।
আমি:- আমি ডিভোর্স চাই।
কথাটা শুনেও সিয়াম আমার দিকে তাকালো
না।
আমার রাগ তাতে আরো বেড়ে গেল,
আমি:- আমায় দু দিনের মধ্যে ডিভোর্স দিবে।
সিয়াম:- আচ্ছা বলে বাসা থেকে বের হয়ে
গেল।
সকাল ৫:৩০পর্যন্ত বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম।
অনেক ভেবে দেখলাম এ ঘর এ আর থাকা সম্ভব নয়।আগে
জানতাম তিন বার তালাক বললেই সম্পর্ক ভেঙে
যায়।
হয়তো সিয়াম তা বলেনি তবে সে যেহেতু
রাজি, তার
মানে সে মন থেকে আমায় দূরে সরিয়ে
দিয়েছে অনেক
আগে।যেখানে অবহেলা ভর করে গেল সেখানে
আমি
কিসের আশায় ভর করে থাকি?
এই ভেবে আমি বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
আমার শ্বাশুরি তখন ঘুমায়,তাকে আর জাগাইনি।
সে হয়তো
আমি চলে যাওয়াতে খুশি ই হবেন।
আমার সাথে কিছুই আনিনি,শুধু ফোনটা আর
সাথে ৮বছরের
স্মৃতি নিয়ে আমার বাসায় চলে আসলাম।
সিয়াম বললো
ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিবে,কই এখনো
দিচ্ছেনা!
আমায় একবার খোঁজার চেষ্টা ও করেনি,মাথার
উপর
বোঝা নেমে গেলে কেউ আর তার খোঁজ
নেয়না।
আজ ৭ই আগস্ট, আমাদের নবম বিবাহবার্ষিকী।
আচ্ছা
সিয়াম কি ভুলে গেছে?হয়তো আজকের দিনের
জন্যই ও
বিচ্ছেদ করছেনা।কাল হয়তো ডিভোর্স পেপার
পাঠাবে।
এমন সময় কলিংবেল এর শব্দ...
বুকের ভিতর হু হু করে উঠল, হয়তো যে দিনে কিছুর
শুরু
হয়েছিল সে দিনেই তার সমাপ্তি হবে।
দরজা খুলে দেখি কেউ নেই।আশে পাশে
তাকালাম
কাউকে দেখছিনা..
এর মাঝেই বাচ্চার কাঁন্নার শব্দ।নিচে তাকিয়ে
দেখি
মেঝেতে তোয়ালে পেচানো একটা বাচ্চা
কাঁদছে।
বাচ্চা দেখে আমি "থ" হয়ে দাড়িয়ে গেলাম।
কেউ নেই
আশে পাশে,কে এই বাচ্চা রেখে গেল?
বাচ্চাকে কোলে নিলাম,ও থেমে গেল।কি
কোমল
হাতগুলি।হাত দিয়ে আমার গাল ধরছে।বাচ্চার
ছোঁয়া
পেয়ে আমার কাঁন্না এসে গেল।কত বছরের
প্রতিক্ষা এই
স্পর্ষ এর।বাচ্চার ঘ্রান এ কি জাদু ই না থাকে।
২মিনিট
এর পরিচয় এ এই বাচ্চা আমায় জাদু দিয়ে বস করে
ফেলেছে।আমি বাচ্চাকে বুকের ভিতর নিয়ে
বসে আছি।
খুব ভয় হচ্ছে ওকে হারাবার?
খুব ভাবতে ইচ্ছে হচ্ছে,হয়তো আল্লাহ নিজে
থেকে এসে
আমায় বাচ্চা দিয়ে গেছে।
আমি যুগ এর পর যুগ কাটিয়ে দিতে পারি এ
বাচ্চার মুখ
দেখে।
কি কোমল মুখ,ছোট ছোট হাত-পা।
বাচ্চার দিকে তাকিয়ে বার বার বলতেছি,মা
কেন তুই
আগে এলিনা?আমায় কেন এত অপেক্ষা করালি
তুই?
বাবুটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে,মনে হচ্ছে
ও বলতে
চায়,মা কেঁদনা তুমি,আমি এসে গেছি।আমি
আমার
বাচ্চার মুখে মা ডাক শুনতেছি আমার মন দিয়ে।
একটা
বাচ্চা খানিকের মধ্যে কোন মেয়ের মাঝে মা
এর জন্ম
দিয়ে দিতে পারে।
আবার কলিংবেল এর শব্দ,হয়তো এ বাচ্চাকে
নিয়ে যাবে
কোল থেকে আমার।আমি আর হারাতে পারবো
না কিছু।
এই বলে বাবুকে কোলের মাঝে লুকালাম।
এর মধ্যে মা আসলো আমার রুম এ,সে এসে আমার
কোলে
বাচ্চা দেখে অবাক হয়ে আছে।
আমি:- কে এসেছে মা?
মা:- কে এই বাচ্চা?
আমি:- আমার বাচ্চা।
মা:- পাগল হইছিস তুই?
আমি:- কে এসেছে বলবেতো?
মা:- একটা ছেলেএই খাম টা দিয়ে গেল।
আমি খাম টা হাতে নিয়ে দেখি একেবারে
স্বপ্নের মতন
লাল খাম,তার উপরে সিয়াম এর নাম।এই বুঝি
ডিভোর্স
পেপার।আজকের এমন দিনে সিয়াম কি করে
পারলো
আমায় ডিভোর্স পেপার পাঠাতে! আজকে
বিবাহবার্ষিকী তে আমি সবচেয়ে সেরা
উপহার
পেয়েছি আর তার প্রতিদান সিয়াম ও সবচেয়ে
বড় কিছু
কেড়ে নিবে।
হয়তো কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হবে। এটাই
কপালের
লেখা।
খামটা খুললাম,কেন যেন কোন ভয় করছেনা,এ
বেপার
নিয়ে আর চিন্তা নিতে পারছিলাম না।
খাম খুলে দেখি সিয়াম এর হাতের লেখায়
একটা চিঠি।
লুবু.....
আজ আমাদের নবম বিবাহবার্ষিকী, তুমিও হয়তো
ভুলে
যাওনি।
আমার কাছে তুমি ডিভোর্স চেয়েছিলে,ওই
কাগজ তো
আমি দিতেই পারতাম, তবে তুমি আমার কোন
কাগজের
দলিল নয় যা আমি কাগজ দিয়ে শেষ করতে
পারতাম,যেদিন প্রথম তুমি আমার হলে, সেদিন ই
মনের
দলিল দিয়ে দিয়েছিলাম,আর মন কোন ডিভোর্স
এর
জায়গা দেয়ানা।
সেদিন রাতে আমি কথা বলেছিলাম আমার এক
বন্ধুর
সাথে,যে ডাক্তার। ওর হাসপাতালে এক
পাগলিকে
ভর্তি করানো হয়েছিল,যে অন্তসত্ত্বা ছিল।
আমার বন্ধু আমাকে জানায়,ও তো জানতো
আমাদের
একটা সন্তান এর খুব দরকার,আর ওই বাচ্চার একটা
নিশ্চিন্ত আশ্রয় এর দরকার,যা ওর পাগলি মা
দিতে পারতো
না।আর আমি শাড়ি এই বাচ্চার মায়ের জন্য
কিনেছিলাম।
আর তুমি আমায় ভুল বুঝলে?
যেদিন রাতে কথা বলেছিলাম সেদিন বাবু
পৃথিবীতে
এসেছিল।
আমি খুশির খবর দিতে যাব এর মাঝেই তুমি ভুল
ক্ষেপে গেলে।
তারপর সকালে জানতে পারি বাবুর মা মারা
গেছেন,তখন
তোমার সাথে চাইলেও ভালো আচরন করতে
পারিনি।বাসায় এসে
দেখি তুমি নেই।
ভেবেছিলাম আমাদের বিবাহবার্ষিকীতে
বাবুকে
উপহার দিব।ওই যে বাবুটা তোমার কাছে সেই
আমাদের
সন্তান।আমাদের এত দিনের অপেক্ষার ফসল।আমি
জানি
এতোক্ষনে মেয়ের সাথে ভাব করে
ফেলেছো।তুমি তো এমন একজন যে খুব সহজে
কাউকে অধিকারে নিয়ে যায়। আমার মনের মতন
ই,আমার লুবু।
সিয়াম।
চিঠি টা পড়ে আমি কাঁন্না থামিয়ে রাখতে
পারিনি।আমার সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল।
এত সুখ কি
আমার প্রাপ্য ছিল?জীবনে আমি ই মনে হয় প্রথম
মেয়ে যে এরকম ডিভোর্স লেটার পেল।যা
পেয়ে শরীরের সমস্ত সুখ বের হয়ে আসতে চাইছে।
আমি আর অপেক্ষা না করে সিয়াম কে কল
দিলাম।আমার কাঁন্নায় গলা ধরে
যাচ্ছিল,
সিয়াম:- লুবু
আমি কাঁন্না করতেছি।
সিয়াম:- বাবুটার মা আর নেই।
আমি:- কি বলো? আমি আবার মারা গেলাম কখন?
আমার
এতো সকালে মরলে হবে?মেয়ে বিয়ে দিব না?
সিয়াম কিছু বলছেনা,ওপাশ থেকে ফুস..ফুস শব্দ।
আমি খুব
বুঝেছি সিয়াম কাঁদছে।
আমি:- এই খারাপ লোক,তাড়াতাড়ি এসে
আপনার বউ আর
মেয়েকে নিয়ে জান। আমরা দুজন ই কাঁদছি
আপনার
জন্য।
সিয়াম:- দরজাটা না খুললে ভিতরে কি করে
আসবো? কখন থেকে বাসার সামনে দাড়িয়ে
আছি।মেয়ের বাবা হয়েছি,বয়স হয়েছে,এখন কি
আর শক্তি আছে দরজা ভাঙার
(সংগৃহিত গল্প)

No comments

Powered by Blogger.